বাগেরহাটের ঐতিহ্যবাহী শিকদার বাড়িতে এইবছর হচ্ছে না দুর্গাপূজা।

বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি প্রতিমার জন্য পরিচিত বাগেরহাটের শিকদার বাড়িতে এবার দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়নি।
বৃহস্পতিবার সকালে ষষ্ঠীপূজার মধ্যে দিয়ে সব জায়গার মতো এ জেলাতেও শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হয়েছে।
সরজমিনে দেখা গেছে, বাগেরহাট সদর উপজেলার খানপুর ইউনিয়নের হাকিমপুর গ্রামের শিকদার বাড়ির পূজা মন্ডপের গেটে তালা ঝুলছে।
২০১১ সালে ২৫১টি প্রতিমা নিয়ে সেখানে প্রথম দূর্গাপূজার জমকালো আয়োজন শুরু হয়। সেই থেকে প্রতিবছর বড় পরিসরে পূজা হয়ে আসছে। গত বছর শিকদার বাড়িতে ৮০১টি প্রতিমা দিয়ে দূর্গাপূজা আয়োজন করা হয়।
বাগেরহাট সদর উপজেলার খানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফকির ফহম উদ্দিন বলেন, অল্প দিনেই দেশ-বিদেশে হাকিমপুরের শিকদারবাড়ির পূজাটি পরিচিতি পেয়েছে। এই আয়োজনকে স্বাগত জানিয়ে এলাকার সব ধর্মের মানুষ সাধ্য অনুযায়ী সহযোগিতা করে থাকে।
ব্যবসায়ী লিটন শিকদার জানান, পূজার ছয় মাস আগে থেকেই মণ্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু হয়। আর প্রতিমা তৈরির শুরুর সময়েই দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে।
এই মণ্ডপে পূজা দেখতে লাখ লাখ দর্শনার্থীর সমাগম ঘটে জানিয়ে তিনি বলেন, এতে সরকারের স্বাস্থ্যবিধি সামাজিক দূরত্ব মেনে এ উৎসব করা সম্ভব হবে না। তাই আমরা প্রতিমা তৈরি না করেই আচার ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে পারিবারিকভাবে ঘট পূজা করব। এ বছর শিকদার বাড়ির পূজা দেখতে দর্শনার্থীদের না আসার অনুরোধ করেন লিটন শিকদার।
স্থানীয় শেখ মনিরুজ্জামান, আবুল কাসেম ও গৌর পাল জানান, গত কয়েক বছর ধরে ব্যক্তি উদ্যোগে বাগেরহাটের হাকিমপুরের শিকদার বাড়িতে দেশের সবচেয়ে বড় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এই পূজা দেখতে দেশের বিভিন্ন প্রাপ্ত থেকে হাজার হাজার মানুষ আসেন।
ভবিষ্যতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমলে আবারও বড় পরিসরে পূজার আয়োজন হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন।
বাগেরহাট জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক রতন কুমার নন্দী জানান, জেলায় এ বছর ৬১৭টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের দেওয়া নির্দেশনা মেনে দর্শনার্থীদের মুখে মাস্ক পরে মণ্ডপে যাওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায় বলেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিপুল জনসমাগম না করতে সব মন্দির কমিটিকে অনুরোধ করা হয়েছে।