চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৭২ হাজার টাকার বিনিময়ে ধর্ষণের সালিস, ক্ষোভে কিশোরীর আত্মহত্যা।

চাঁপাইনবাবগঞ্জে কয়েকদিন আগে দ্বারিয়াপুর মহাজনপাড়া মহল্লায় একই এলাকার তহিদুল ইসলামের ছেলে আব্দুল বাসির চাচাতো বোন আসিফার (১৩) ঘরে ঢুকে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। মেয়ের চিৎকারে আসিফার মা ঘরের দরজা আটকে দেয়। আটক থাকা অবস্থায় ধর্ষক বাসিরের বাবা তহিদুলের বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড সদস্য মতিউর রহমান মটন মিয়া নিজ বাসায় দুই পক্ষকে নিয়ে সালিসে মেয়ের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৭২ হাজার টাকায় সমাধান করে দেন। সমাধান মানতে না পেরে ক্ষোভে শুক্রবার বিষ পানে আত্মহত্যা করে সাদিকুল ইসলামের মেয়ে ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী আসিফা খাতুন (১৩)।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সকালে বিষ পানে আত্মহত্যার চেষ্টা করলে পরিবারের লোকজন চাঁপাইনবাবগঞ্জ আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে বিকেল ৪টার দিকে চিকিৎসারত অবস্থায় হাসপাতালেই মারা যায় আসিফা।
নিহত আসিফার বড় বোন বলেন, সালিসে কাউন্সিলর মতিউর রহমান মটন মিয়াসহ আরো উপস্থিত ছিলেন দুই পরিবারের সদস্যরা। ৭২ হাজার টাকায় ধর্ষণের সমাধান মানতে না পেরে সালিসেই আসিফা সাফ জানিয়ে দেয় এ বিচার মানিনা। এসময় আসিফা সকলের উপস্থিতিতে বলে, আমাকে বাসির ধর্ষণ করেছে। আমি তাকেই বিয়ে করবো, টাকা নিবো না।
আসিফার ভাবি জানায়, আসিফা ধর্ষণের পর হতেই বলতো, আমি বাসিরকে বিয়ে করতে না পেলে আত্মহত্যা করবো। আর এটি করেই ফেলেছে। ৭২ হাজার টাকায় সমাধান হলেও কাউন্সিলর মতিউর রহমান মটন মিয়া আমাদের পরিবারকে ৬০ হাজার টাকা দিয়েছে। বাকিটা মটন মিয়ার কাছেই রেখে দিয়েছে বলে জানান তিনি।
এবিষয়ে কথা বলতে হাসপাতালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড সদস্য মতিউর রহমান মটন মিয়ার সাক্ষাৎ পাওয়া গেলেও তিনি এবিষয়ে কথা বলতে নারাজ। শনিবার দুপুরে হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের নিকট লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) মোজাফফর হোসেন জানায়, পরিবারের পক্ষ হতে নারী নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এবিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।